মঙ্গলবার ● ২৭ জুন ২০২৩
প্রথম পাতা » ব্যবসা-বাণিজ্য » মাংস কাটার কাঠের খাইট্টা’র চাহিদা বেড়েছে
মাংস কাটার কাঠের খাইট্টা’র চাহিদা বেড়েছে
প্রকাশ ঘোষ বিধান,পাইকগাছা; কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পাইকগাছায় মাংস কাটার কাঠের খাইট্টা ব্যবসা জমে উঠেছে। মুসলমান সম্প্রদায়ের অন্যতম বড় উৎসব ঈদুল আজহা। ঈদুল আজহা মানেই পশু কোরবানি। আর, এই কোরবানির পশু জবাইয়ের পর মাংস প্রক্রিয়াকরণের কয়েকটি খুবই প্রয়োজনীয় উপকরণগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মাংস কেটে টুকরো করার কাজে ব্যবহৃত কাঠের পাটাতন ‘খাইট্টা’। আর পশুর মাংস কাটার কাজে এই কাঠের খাইট্টা ব্যবহার করে থাকেন কসাইরা।তবে অনেকেই পশু জবাইয়ে মাংস প্রক্রিয়াকরণের এই কাঠের খাইট্টা কিনে থাকেন।
সারা বছর কসাইখানায় খাইট্টার ব্যবহার হলেও, ঈদুল আজহার সময় এর চাহিদা বেড়ে যায়। এ সময় সারাদেশের আনাচে-কানাচে এই ‘খাইট্টা’র কদর লক্ষ্য করার মতো বেড়ে যায়।কোরবানির সময় গ্রাম থেকে শহরের বাড়ি পর্যন্ত এর বিস্তৃতি ঘটে। ঈদের দিন জবাই করা বিপুল পশু প্রক্রিয়া করতে প্রচুর পরিমাণ কাঠের গুড়ি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। একটি গরু প্রক্রিয়া করতে প্রায় দুই থেকে তিনটি গুঁড়ির প্রয়োজন হয়ে থাকে। একটি ছাগলের জন্য একটি ‘খাইট্টা’ যথেষ্ট।
সাধারণত এলাকার স’ মিলগুলোতে গাছের গুঁড়ি করাতে ফেলে ছোট ছোট গোলাকৃতির টুকরো তৈরি করে খাইট্টা বানানো হয়। এলাকাভেদে এর বিভিন্ন নাম আছে। কোথাও এটাকে বলে খাইট্টা, কোথাও আবার বলে খটিয়া, কাইটে, গুঁড়ি, শপার ইত্যাদি।
পাইকগপছার আশেপাশের কয়েকটি স’ মিলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় এই গুঁড়ি তৈরি হচ্ছে। স’ মিলের মালিকরা জানান, মাংস কাটার কাজে কাঠের এই গুঁড়ির কোন বিকল্প নেই। এটি তৈরিতে বিশেষ সর্তক থাকতে হয়। কাঠের ব্যবহারও নির্দিষ্ট হতে হয়।
খাইট্টা সব কাঠ দিয়ে তৈরি করা যায় না। এটি তৈরি করতে হয় এমন কাঠ দিয়ে, যাতে চাপাতির কোপে কাঠের গুঁড়া না ওঠে। কোরবানির মাংস কাটার জন্য এসব খাইট্টার অধিকাংশই তেঁতুল গাছের কাঠ দিয়ে তৈরি।কাঠ ব্যবসয়ী আব্দুল হাকিম জানান, তেঁতুল গাছের কাঠ দিয়েই খাইট্টা বানাতে হয়। কারণ হিসেবে তিনি জানান, তেঁতুল কাঠে সহজে চাপাতির কোপ বসবে না। তাই, কাঠের গুঁড়াও উঠবে না। এতে মাংস নষ্ট হওয়ার কোনো সম্ভাবনা থাকে না।
আর এক দিন পরই ঈদ। মানুষের চাহিদার কথা বিবেচনা করে ক্ষুদ্র ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা এসব খাইট্টার পসরা নিয়ে বসেছেন।পাইকগাছার গদাইপুর,নতুন বাজার আগড়ঘাটসহ বিভিন্ন বাজারে এই ব্যবসা জমে উঠেছে। বিভিন্ন মাপের বিভিন্ন দামের এসব খাইট্টা সাজিয়ে রাখা হয়েছে। ১৫০ থেকে শুরু করে ৩০০ টাকার মধ্যে তেতুঁল কাঠের খাইট্টা মিলছে।
খাইট্টা কিনতে আসা তকিয়ার মোস্তাফিজুর বলেন, কোরবানির মাংস কাটতে খাইট্টা খুব জরুরী। আর তেঁতুল কাঠের খাইট্টায় মাংস প্রস্তুত করা ভালো হয়। কাঠের গুড়া খুব কম ওঠে। খাইট্টার চাহিদা বেশি থাকায় বিভিন্ন বাজার ও রাস্তার মোড়ে মোড়ে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন আকারের খাইট্টা বিক্রি করছেন। পছন্দ অনুযায়ী ক্রেতারা দর দাম করে তাদের প্রয়োজনীয় খাইট্টা কিনছেন।