শিরোনাম:
পাইকগাছা, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১

SW News24
শনিবার ● ২৯ জুলাই ২০২৩
প্রথম পাতা » সুন্দরবন » সুন্দরবনে বেড়েছে বাঘের সংখ্যা
প্রথম পাতা » সুন্দরবন » সুন্দরবনে বেড়েছে বাঘের সংখ্যা
৩২৪ বার পঠিত
শনিবার ● ২৯ জুলাই ২০২৩
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

সুন্দরবনে বেড়েছে বাঘের সংখ্যা


অরবিন্দ কুমার মণ্ডল, কয়রা, খুলনা ঃ---বিশ্ব বাঘ দিবস আজ। দিবসটি সামনে রেখে সুন্দরবনের বাঘ সুরক্ষায় নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে বনবিভাগ। এসব পদক্ষেপের কারণে এর মধ্যে বাঘের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। ভবিষ্যতে আরও বাড়বে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।


 জানা গেছে, সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে গত পাঁচ বছরে বাঘের সংখ্যা ১০৬ থেকে বেড়ে বর্তমানে ১১৪টি হয়েছে। সর্বশেষ বাঘ জরিপে সুন্দরবনে ১১৪টি বাঘ রয়েছে বলে ক্যামেরা ট্রাকিং জরিপে উঠে এসেছে। সুন্দরবনে বনদস্যুদের আত্মসর্ম্পপণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা ও চোরা শিকারিদের দৌরাত্ম্য কম হওয়া এবং বনবিভাগ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করায় রয়েল বেঙ্গল টাইগার বা বাঘের সংখ্যা বেড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে বিশেজ্ঞরা বলছেন, সুন্দরবনই হচ্ছে এশিয়ার মধ্যে রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ বন্যপ্রাণির বৃহত্তম আবাসভূমি। তবে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাসভূমিকে তাদের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। সুন্দরবনকে বন্যপ্রাণির জন্য নিরাপদ করা গেলে দ্রুত বাঘের সংখ্যা আরও বাড়বে। বর্তমানে সুন্দরবনে বাঘ গণনার কাজ চলছে। এর মধ্যে পশ্চিম বিভাগের কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর থেকে পূর্ব বিভাগে গণনার কাজ শুরু করা হবে। তবে পশ্চিম বিভাগে ক্যামেরা ট্রাকিং শেষে বাঘ বৃদ্ধি পাওয়ার আশা করছে বনবিভাগ। সম্প্রতি সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় বাঘের অবাধ বিচরণ ও প্রতিনিয়ত বাঘের সাবক দেখা মিলছে বলে জানিয়েছে সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল জেলে বাওয়ালীরা। বন বিভাগের দেওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালের জরিপে সুন্দরবনে বাঘ ছিল ৩৫০টি। এরপর ১৯৮২ সালে জরিপে ৪২৫টি এবং এর দু’বছর পর ১৯৮৪ সালে সুন্দরবন দক্ষিণ বন্যপ্রাণি অভয়ারণ্যের ১১০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় জরিপ চালিয়ে ৪৩০ থেকে ৪৫০টি বাঘ থাকার কথা জানানো হয়। ১৯৯২ সালে ৩৫৯টি বাঘ থাকার তথ্য জানায় বনবভিাগ। পরের বছর ১৯৯৩ সালে সুন্দরবনের ৩৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় প্যাগমার্ক পদ্ধতিতে জরিপ চালিয়ে ধন বাহাদুর তামাং ৩৬২টি বাঘ রয়েছে বলে জানায়। ২০০৪ সালে জরিপে বাঘের সংখ্যা ছিল ৪৪০টি। ১৯৯৬-৯৭ সালের জরিপে বাঘের সংখ্যা উল্লেখ করা হয় ৩৫০টি থেকে ৪০০টি। ওই সময়ে বাঘের পায়ের ছাপ পদ্ধতিতে গণনা করা হয়। ২০১৫ সালের জরিপে সুন্দরবনের বাংলাদশে অংশে বাঘের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে দাঁড়ায় ১০৬টিতে। হঠাৎ করে সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা ৪০০টি থেকে ১০৬টিতে এসে দাঁড়ালে সারা বিশ্বে হৈচৈ পড়ে যায়। সর্বশেষ বাঘ জরিপে সুন্দরবনে ১০৬ থেকে বেড়ে বর্তমানে বাঘের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১৪টিতে। চলতি বছর শুরু করা হয় পুনরায় বাঘ গণনার কাজ। বর্তমানে সুন্দরবনে বাঘের আনাগোনা যেভাবে দেখা যাচ্ছে তাতে মনে হয় বাঘের সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি বছর পর্যটকরা একসঙ্গে তিনটি বাঘের চলাচল দেখতে পেয়েছেন। টহল ফাঁড়ি এলাকায় একসঙ্গে তিনটি বাঘের হুংকারসহ প্রতিনিয়ত বাঘের সঙ্গে দেখা মিলছে জেলে বাওয়ালী, মৌয়ালসহ পর্যটকদের। এতে করে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করছেন স্থানীয় অধিবাসীরা। সুন্দরবন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০০১ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৫০টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে স্বাভাবিকভাবে মারা গেছে মাত্র ১০টি। ১৪টি বাঘ পিটিয়ে মেরেছে স্থানীয় জনতা, একটি মারা গেছে ২০০৭ সালের সুপার সাইক্লোন সিডরে ও বাকি ২৫ বাঘ মেরেছে চোরা শিকারিরা। খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) এজেডএম হাছানুর রহমান বলেন, বর্তমান সরকার বাঘের সংখ্যা বাড়াতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সুন্দরবন দস্যুমুক্ত করা হয়েছে। যার সুফল কিন্তু দেখা যাচ্ছে। বন্যপ্রাণি শিকার বন্ধ করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। নেওয়া হয়েছে নানামুখী তৎপরতা। বনবিভাগ বাঘ সুরক্ষায় যেভাবে কাজ করছে তাতে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা দিন দিন আরও বৃদ্ধি পাবে। সুন্দরবন ব্যবস্থাপনা কমিটির সহ-সভাপতি অসিত কুমার মণ্ডল বলেন, লোকালয়ে আসা বাঘ নিরাপদে ফেরাতে এর মধ্যে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টি করা হয়েছে। যার ফলে এখন আর মানুষ বাঘ পিটিয়ে মারে।





আর্কাইভ