বৃহস্পতিবার ● ১৭ আগস্ট ২০২৩
প্রথম পাতা » অপরাধ » ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে চিকিৎসককে হুমকি দেন শিবিরকর্মী তাফসির
ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে চিকিৎসককে হুমকি দেন শিবিরকর্মী তাফসির
সদ্য মারা যাওয়া জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর চিকিৎসক এস এম মোস্তফা জামানকে হত্যার হুমকিদাতা তাফসিরুল ইসলামকে ঝিনাইদহের মহেশপুর থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও ডাক্তারকে ভয়ভীতি দেখাতে তাফসির হুমকি দেন বলে স্বীকার করেছেন র্যাবের কাছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, গত ১৩ আগস্ট জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী অসুস্থ হওয়ায় তাকে কাশিমপুর কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইমার্জেন্সি বিভাগে ভর্তি করা হয়। ১৪ আগস্ট চিকিৎসারত অবস্থায় রাত ৮টা ৪০ মিনিটে তিনি মারা যান। বিশেষজ্ঞ টিম আন্তর্জাতিক প্র্যাকটিস অনুসরণ করে অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে সাঈদীর চিকিৎসা করে। তার পরিবারও চিকিৎসার ব্যাপারে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।আল মঈন বলেন, সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিসহ চিকিৎসক সমাজকে হেয় প্রতিপন্ন করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছে। বিশেষজ্ঞ টিমের একজন সদস্য এসএম মোস্তফা জামানকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন আইডি থেকে অপপ্রচারের পাশাপাশি প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী চিকিৎসক রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান চলমান রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় গতরাতে ঝিনাইদহের মহেশপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাফসিরুল ইসলামকে (২৩) গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হুমকির কথা স্বীকার করেছেন।
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতার তাফসির স্থানীয় একটি কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছেন। তিনি স্কুলজীবন থেকেই বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের একজন সক্রিয় সদস্য। তার বাবা রফিকুল ইসলাম এলাকার জামায়াতের একজন সক্রিয় কর্মী। ২০১৩/২০১৪ সালে এলাকায় নাশকতা সৃষ্টির অপরাধে তার বাবার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয় এবং তিনি কারাভোগও করেন।
তাফসিরুল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির দ্বারিয়াপুর, মহেশপুর তাফসিরুল ইসলাম’ ও ‘বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির দ্বারিয়াপুর, মহেশপুর ওরফে তাফসিরুল ইসলাম’ নামে দুটি গ্রুপের অ্যাডমিন। দলীয় ও রাজনৈতিক মতাদর্শ, ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও আক্রোশ থেকে সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তার চিকিৎসা প্রদানকারী চিকিৎসক মোস্তাফা জামানের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর বিভিন্ন মাধ্যমে খুঁজে বের করেন। পরে ম্যাসেজ দিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেন। চিকিৎসক সাধারণ ডায়েরি করলে তাফসির হোয়াটসঅ্যাপ থেকে মেসেজ মুছে ফেলেন। তবে তার মোবাইলে ওই মেসেজের স্ক্রিনশট পাওয়া যায়।
খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে একটি চক্র অপপ্রচারের চেষ্টা করছে এবং একই সাথে যারা তার চিকিৎসার সাথে জড়িত ছিলেন তাদের হুমকি, হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের চেষ্টা করছে। এই ধরনের আইনবিরোধী অপকর্ম যারাই করবে তাদের খুঁজে বের করে র্যাব আইনি ব্যবস্থা নেবে।