বুধবার ● ২০ ডিসেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » কৃষি » মাগুরায় স্কোয়াশ চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে
মাগুরায় স্কোয়াশ চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে
শাহীন আলম তুহিন,মাগুরা থেকে : মাগুরায় এই প্রথমবারের মতো চাষ হচ্ছে বিদেশি সবজি স্কোয়াশ । এ চাষে তাই জেলার কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে । জেলার শ্রীপুর উপজেলার আমলসার ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামে কৃষক আসাদুজ্জামান বিদেশি এ সবজি স্কোয়াশ চাষ করে পেয়েছেন সাফল্য। মালচিং পদ্ধতিতে প্রথমে জমিতে বেড তৈরি করে তিনি এ চাষ করছেন । পরিশ্রম কম কিন্তু লাভ বেশি বিধায় এ চাষে সেসহ এলাকার অনেক কৃষক এ চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছেন ।
কৃষি বিভাগ বলছে, স্কোয়াশ সবজি বাংলাদেশে এই বারের মতো চাষ হচ্ছে । এটি মুলত মধ্যপ্রচারের দেশগুলো ভালো হয় । শীতকালীন সবজি হিসেবে এটি বেশি পরিচিত । এ সবজিটি লম্বাটে আকৃতির একটি ফসল । এ সবজিটি আমাদের দেশের লাউ ও মিষ্টি কুমড়োর মতো । খেতে সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যসম্মত একটি সবজি । কৃষিবিভাগ থেকে এ চাষে জেলার কৃষকদের সহযোগিতা করা হচ্ছে ।
মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার আমলসার ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের কৃষক আসাদুজ্জামান বলেন,এই প্রথমবারের মতো আমি মালচিং পদ্ধতিতে স্কোয়াশ চাষ করে সাফল্য পেয়েছি । এ চাষে শ্রীপুর উপজেলা কৃষি অফিস থেকে আমি প্রশিক্ষণ গ্রহন করি । তারপর এ চাষে মনোনিবেশ করি । স্কোয়াশ সবজিটি একটি বিদেশি সবজি । আমি এবার ১০ শতাংশ জমিতে এ চাষ করেছি । প্রথমে জমিতে বেড তৈরি করে জৈব ও গোবর সার দিয়ে জমি প্রস্তুত করি । এরপর এ বছর নভেম্বর মাসের শুরুতে ইউনাইটেড সিড এর বীজ সংগ্রহ করে জমিতে রোপন করি । বীজ বোনার কিছু দিনের মধ্যে জমিতে ভালোভাবে পরিচর্যা করি । ১ মাসের মধ্যে বীজ থেকে চারা গজানো সাথে সাথে ক্ষেতের পরিচর্যায় আরো যতœশীল হই । ডিসেম্বর মাসের প্রথমে গাছে ফল আসা শুরু হয় । আমার ক্ষেতে এবার ৪২০টি স্কোয়াশ গাছের চারা হয়েছে । একটি দেখতে লম্বাটে আকৃতির সবজি । আমাদেও দেশের লাউ খেতে যেমন সুস্বাসু তেমনি স্কোয়াশও খেতে তেমনি সুস্বাদু । এ চাষে আমি ফেরোমন ট্রাপ ব্যবহার কওে ক্ষেতের পোকা ধ্বংসের হাত ফসলকে রক্ষা করেছি । এ আমার খরচ হয়েছে ৮-১০ হাজার টাকা । এ বছর আমি ২৫-৩০ হাজার টাকার স্কোয়াশ সবজি বিক্রি করবো বলে আশা রাখছি । এ চাষে শ্রীপুর উপজেলা কৃষি অফিস আমাকে সর্বাত্বক পরামর্শ ও সহযোগিতা করেছে ।
একই এলাকার অন্য চাষী সেলিম জানান, আমি এবার নতুন সবজি হিসেবে স্কোয়াশ চাষ করেছি । এটি একটি নতুন জাতের সবজি ফসল । এ চাষে আমাদেও ধারণা কম । তাই শ্রীপুর উপজেলা কৃষি অফিসের সাথে যোগাযোগ করে তাদেও সার্বিক পরামর্শে আমি এবারই প্রথম স্কোয়াশ চাষ করেছি ১০ শতাংশ জমিতে । এটি লাউয়ের মতো একটি সবজি । একটি স্কোয়াশ গাছে ৬-৭টি ফল ধরে । এক একটি ওজন হয় প্রায় ১ কেজি থেকে সোয়া কেজি । বর্তমানে আমাদেও গ্রামের চাষীই আমাদেও দেখে এ চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছে ।
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি অফিসার সালমা জামান নিপা বলেন,স্কোয়াশ মধ্যপ্রচারের বিভিন্ন দেশে এ সবজি চাষ হয় । আমরা এই প্রথম বারের মতো এ চাষে কৃষকদের উদ্ধুদ্ধ করেছি । কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে এ চাষে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে । এটি একটি নিরাপদ ,সুস্বাদু সবজি । এ সবজির আদি নিবাস অস্ট্রেলিয়ায় । বর্তমানে এ সবজি আকর্ষনীয় ও সুস্বাদু হওয়ায় আমাদের দেশে এ চাষ হচ্ছে । এ চাষে কৃষকদের পরিশ্রম কম ও লাভ বেশি । মালচিং পদ্ধতি এ চাষ করতে হয় । প্রথমে জমিতে বেড তৈরি জৈব সার প্রয়োগ করে জমি প্রস্তুত করতে হয় । তাছাড়া এ সবজিটি আমাদের দেশের চরাঞ্চলে বেশি চাষ হয় । শ্রীপুর উপজেলা ছাড়াও আমরা জেলার অন্যান্য উপজেলায় এ চাষে কৃষকদের পরামর্শ ও সহযোগিতা করছি ।