বুধবার ● ২৪ এপ্রিল ২০২৪
প্রথম পাতা » কৃষি » কেশবপুরে ঘেরের জলাবদ্ধতায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত
কেশবপুরে ঘেরের জলাবদ্ধতায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত
এম আব্দুল করিম, কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি : যশোরের কেশবপুরে ইরি-বোরো ধানের বা¤পার ফলন হলেও পূর্বাঞ্চলের ভবদাহ এলাকায় সৃষ্ট মাছের ঘেরের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে না পারায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ব্যহত হয়েছে।
ইরি-বোরো ধান আবাদে উপজেলা কৃষি অফিস এবছর ১৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। কিন্তু মৌসুম শেষে অর্জিত হয় ১৩ হাজার ৭০ হেক্টর জমি। ফলে ঘেরের সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কারণে ১ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ কম হয়। ১ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ না হওয়ায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ হাজার ৭২৫ মেট্রিকটন ধান কম উৎপাদন হবে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে। যার বর্তমান বাজার মূল্য ২ কোটি ৭৮ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।
এবছর ধান ক্ষেতের রোগ-বালাই কম থাকায় মাঠগুলো এখন সোনালী রঙের আভায় এক অপরূপ শোভা ছড়াচ্ছে। বোরো ধানের সোনালি শীষ দোল খাচ্ছে বাতাসে। সেচ, আগাছা পরিষ্কারসহ সকল কাজ স¤পন্ন করে এখন ধান, ঘরে তোলার স্বপ্নে বিভোর এ উপজেলার হাজারো কৃষক। পুরো উপজেলায় এবার হাইব্রিড ছাড়াও উফশী ব্রি-ধান- ২৮. ব্রি-ধান-৫০, ব্রি-ধান-৬৩. ব্রি-ধান-৭৪. ব্রি-ধান- ৮৮ ও ব্রি-ধান-১০০ জাতের ধানের আবাদ হয়েছে সবচেয়ে বেশি। কৃষি অফিস জানায়, চলতি বোরো মৌসুমে এ উপজেলায় ১৪ হাজার ৫’শ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। ধানের উৎপাদন ধরা- হয়েছিল ১ লাখ ১ হাজার ৩০৭ মেট্রিক টন।
ঘেরের জলাবদ্ধতা ফলে ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় এবার ১০ হাজার ৭২৫ মেট্রিকটন ধান কম উৎপাদন হবে। যার বাজায় মূল্য ২ কোটি ৭৮ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। ঘেরের পানি নিষ্কাশন করতে না পারায় উপজেলার বাগডাঙ্গা, পাঁজিয়া, কালিচরণপুর, নিলভুকশিয়া, কাটাখালী, মনোহর নগর, নারায়ণপুর ও হদ বিল এলাকার হাজারো কৃষক এ বছর বোরো ধানের আবাদ করতে পারেনি। ব্যাসডাঙ্গা গ্রামের কৃষক রেজাউল ইসলাম, মাগুরাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ বলেন তাদের গরালিয়া বিলের জমি সেলিমুজ্জামান আসাদের কাছে ঘেরের জন্য লিজ দেয়া হয়েছে। ঘের মালিক মাছ চাষের জন্যে প্রতি শুষ্ক মৌসুমে ভূ-গর্তস্থ পানি তুলে ঘের ভরাট করে। আবার মৌসুম শেষে স্যালো মেশিন দিয়ে ঘেরের পানি নিষ্কাশন করলে কৃষকরা ধান আবাদ করে। কিন্তু এবছর তা সম্ভব হয়নি। উপজেলা কৃষি অফিসার মাহমুদা আক্তার বলেন, পাউবো নদী খাল খনন করলেও শ্রীনদীর নাব্যতা না থাকায় তা আবারও পলিতে ভরাট হয়ে গেছে। যে কারণে ঘেরের পানি নিষ্কাশন সম্ভব না হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ কম হয়। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও চাষীদের চাহিদামত সার, বীজের জোগান থাকায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলার অনেক এলাকায় ধান কাটা শুরু হয়েছে, আবহাওয়ার বৈরীতা না থাকলে শেষ হাসিটা হাসবে কৃষকরা।