বুধবার ● ১২ জুন ২০২৪
প্রথম পাতা » অপরাধ » নড়াইলে ইজিবাইক চালক অপহরণ ও হত্যা মামলায় ৩ জনের ফাঁসির আদেশ
নড়াইলে ইজিবাইক চালক অপহরণ ও হত্যা মামলায় ৩ জনের ফাঁসির আদেশ
ফরহাদ খান, নড়াইল ; নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মাকড়াইল গ্রামের ইজিবাইক চালক পলাশ মোল্যাকে (২৫) অপহরণ করে হত্যাকান্ডের মামলায় তিনজনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (১২ জুন) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আলমাচ হোসেন মৃধা এ রায় ঘোষণা করেন। ফাঁসির আদেশ ছাড়াও প্রত্যেককে এক লাখ টাকা জরিমানা করেন আদালত।
মৃত্যুদন্ড প্রাপ্তরা হলো-নড়াইলের মাকড়াইল গ্রামের আবুল খায়ের মোল্যার ছেলে আনারুল মোল্যা, পাশের মরিচপাশা গ্রামের মোক্তার সরদারের ছেলে জিনারুল ইসলাম তারা মিয়া এবং আড়পাড়া গ্রামের আবুকার শিকদারের ছেলে নাজমুল শিকদার।
রায় ঘোষণার সময় জিনারুল ইসলাম তারা মিয়া আদালতে উপস্থিত থাকলেও অপর দুই আসামি আনারুল ও নাজমুল অনুপস্থিত ছিলেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৩ জুন সকাল ৭টার দিকে নড়াইলের মাকড়াইল গ্রামের আব্দুস সালাম মোল্যার ছেলে পলাশ মোল্যাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় আনারুল, জিনারুল এবং নাজমুল। তারা ৪০ হাজার টাকায় ইজিবাইক কিনে দেওয়ার প্রলোভনে পলাশকে অপহরণ করে। ২৬ জুন মাগুরা সদর উপজেলার আমুড়িয়া-বাহারবাগ গ্রামের মধ্যবর্তী ধানখোলা মাঠের পাটক্ষেত থেকে অজ্ঞাত হিসেবে একটি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহটি মাগুরা পৌর কবরস্থানে দাফন হয়।
এদিকে, হত্যাকান্ডের পর পলাশের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। বিভিন্ন জায়গায় খবর নিয়েও তার সন্ধান পায়নি পরিবার। এ ঘটনায় লোহাগড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়।
এরপর ৮ জুলাই পুলিশ কর্তৃক উপস্থাপনকৃত লাশের ছবি, পরিহিত পোশাক এবং অন্যান্য আলামত দেখে পরিবার জানতে পারে ‘অজ্ঞাত মরদেহ’টি পলাশ মোল্যার। শ্বাসরোধে হত্যার পর পলাশের মরদেহ কাঁদামাটি দিয়ে ঢেকে আলামত নষ্টের অপচেষ্টা চালায় হত্যাকারীরা।
এ ঘটনায় নিহত পলাশের ভাই আহাদ আলী বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় অপহরণ ও হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত তিনজকে ফাঁসির আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এমদাদুল ইসলাম ইমদাদ বলেন, ৩০২ ধারায় হত্যাকান্ডের অপরাধ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের প্রত্যেককে মৃত্যুদন্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া ২০১ ধারায় আলামত নষ্টের অপরাধ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হওয়ায় প্রত্যেককে সাত বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ৩৬৪ ধারায় অপহরণের অপরাধ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের প্রত্যেককে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত।