শিরোনাম:
পাইকগাছা, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩১

SW News24
বৃহস্পতিবার ● ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » বিবিধ » কয়রায় খালে নেট-পাটা দিয়ে বন্ধ করে মাছ চাষ করায় কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি
প্রথম পাতা » বিবিধ » কয়রায় খালে নেট-পাটা দিয়ে বন্ধ করে মাছ চাষ করায় কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি
৮১ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার ● ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

কয়রায় খালে নেট-পাটা দিয়ে বন্ধ করে মাছ চাষ করায় কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি

---

অরবিন্দ কুমার মণ্ডল, কয়রা খুলনা;  খুলনার সুন্দরবনসংলগ্ন উপকূলীয় কয়রা উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে ৯৯টি ছোট-বড় সরকারী খাল। এর মধ্যে অর্ধশতাধিক খালে মাটির বাঁধ নির্মাণ, নেট ও বাঁশের বেড়া দিয়ে মাছ চাষ করায় পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে কৃষিতে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সুপারিশে তাঁদের অনুসারীরাই কয়রার খালগুলো ইজারা পেয়েছেন। তাঁরা ইজারার শর্ত ভেঙ্গে খালে মাটির বাঁধ নির্মাণ ও বাঁশের বেড়া দিয়ে মাছ চাষ করছেন ইচ্ছেমতো। এতে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা ও গ্রীষ্ম মৌসুমে সেচ দিতে না পারায় কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয় সরকারী জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতির ২১ ধারায় আছে, বন্দোবস্ত করা বা ইজারা নেওয়া জলমহালের কোথাও প্রবাহমান প্রাকৃতিক পানি আটকে রাখা যাবে না। এরপরের ধারায় আছে, যেসব জলমহাল থেকে (নদী, হাওর ও খাল) জমিতে সেচ দেওয়া হয়, সেখান থেকে সেচের মৌসুমে পানি সরবরাহে বিঘ্ন ঘটানো যাবে না।

সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ কয়রার শাকবাড়ীয়া খালটি মাছ চাষের জন্য বাঁধ ও নেট-পাটা দিয়ে ১০ খণ্ডে ভাগ করা হয়েছে। খালটির মধ্য দিয়ে অন্তাবুনিয়া এলাকায় বালু ভরাট করে মাঠ তৈরী করায় পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে অন্তাবুনিয়া, শ্রীরামপুর, কালনা, মহারাজপুর, মঠবাড়ী বিলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া তিন কিলোমিটার দীর্ঘ আমতলা খালের দুই স্থানে বাঁধ দিয়ে ও সাতটি স্থানে নেট-পাটা বসিয়ে মাছ চাষ করে পানিপ্রবাহে বাধা দেওয়া হচ্ছে। কয়রা সদর ইউনিয়নের কাশির খাল, কয়রা খাল, ছোট দেউলিয়ার খাল ও গাগরামারী খালের ২০টি স্থানে বাঁধ ও নেট-পাটা বসিয়ে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্থ করা হয়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, কয়রা থানা ও উপজেলা পরিষদের পাশ দিয়ে প্রবাহিত গাগরামারী খাল ভরাট করে উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় বানানো হয়েছে। কয়রা সদর ইউনিয়নের ছোট দেউলিয়া খালটি দখলে ও দূষণে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। খালের ওপর টংদোকান, পাকা ঘরসহ বেশ কিছু অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। চার কিলোমিটার দীর্ঘ কাশির খালটিতেও ছয়টি স্থানে বাঁশের বেড়া দিয়ে পানিপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে। খালটির জরাজীর্ণ স্লুইসগেট দিয়ে প্রবেশ করছে লোনাপানি। খালটির দুই পাশের একাধিক জায়গায় ইট-বালু আর মাটি দিয়ে ভরাট করে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে দোকানপাট।

কয়রা উপজেলা ভূমি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কয়রা উপজেলার অনূর্ধ্ব ২০ একরের ৯৯টি ছোট-বড় সরকারী খালের মধ্যে ৬৪টি খাল ৪১ লাখ ৫৭ হাজার ১৩০ টাকায় ইজারা দেওয়া রয়েছে। ১২টি খালে মামলা চলমান থাকায় ইজারা বন্ধ ও ৩টি খালের ইজারা স্থগিত আছে। ১৫টি খাল থেকে খাস আদায় করা হয়। পাঁচটি খাল সম্পূর্ণ ভরাট হয়ে গেছে।

মহারাজপুর এলাকার কৃষক আসাদুল ইসলাম বলেন, মহারাজপুর বেড়ের খালের চারটি স্থানে বাঁধ দেওয়ায় জলাবদ্ধতায় পাশের মাদারবাড়ীয়া, লক্ষ্মীখোলা, দক্ষিণ দেয়াড়া বিলের অধিকাংশ জমিতে এবার আমন চাষ হচ্ছে না। কৃষক তরিকুল ইসলাম বলেন, সরকারী খাল থাকতেও পানি সরবরাহের সুযোগ নেই। এ বছর অনেকেই আমন রোপণ করেননি। অনেক জমি অনাবাদি পড়ে আছে। উৎপাদন খরচ তুলতে না পেরে চাষের আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষকেরা। অনেকে জীবিকার সন্ধানে অন্যের জমিতে ধান রোপণ করতে যাচ্ছেন দূরের এলাকায়। কয়রার কালনা গ্রামের কৃষক হারুনর রশীদ বলেন, তাঁদের পাশে শাকবাড়ীয়া খালে সারা বছর লোনাপানির মাছ চাষ চলে। অথচ ওই খালে লোনাপানি তোলার কথা নয়। খালটিতে মিষ্টিপানি থাকলে এর দুই পাশে কয়েক শত বিঘা জমিতে আবাদ সম্ভব হতো।

কয়রা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৩৯টি খাল নিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, খালে লোনাপানির অনুপ্রবেশ বন্ধ এবং মিষ্টিপানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা গেলে সংশ্লিষ্ট ৭ হাজার ২ হেক্টর জমিতে বছরে ৩৭০ কোটি ৮০ লাখ টাকার ফসল উৎপাদন করা সম্ভব। এ ছাড়া প্রতিবেদনে কয়রার ২০টি স্লুইসগেটের মধ্যে ৬টি সম্পূর্ণ অকেজো ও ১৪টি সংস্কারযোগ্য উল্লেখ করে নতুন ৪টি স্লুইসগেট নির্মাণের সুপারিশ করা হয়েছে।

কয়রা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, সমস্যা নিরসনে খাল খনন, নেট, বাঁশের বেড়া অপসারণ ও স্লুইসগেট সংস্কারই হচ্ছে স্থায়ী সমাধান। বিলে ফসল ও মাছের সমন্বিত চাষের জন্য খালে লোনাপানির অনুপ্রবেশ বন্ধ একান্ত প্রয়োজন। এগুলো হলে উপজেলায় কয়েক শ কোটি টাকার বাড়তি ফসল উৎপাদন সম্ভব।

কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুলী বিশ্বাস বলেন, খালে কোনো অবস্থাতে বাঁধ কিংবা নেট-পাটা দিয়ে পানিপ্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির সুযোগ নেই। দ্রুত উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। তবে খালগুলোকে আগের স্থানে ফিরিয়ে নিতে হলে সামাজিক সম্পৃক্ততা প্রয়োজন। যাঁরা এগুলোর দখল-দূষণ করছেন, তাঁদের সচেতন করতে হলে সামাজিক সমন্বয় প্রয়োজন।





বিবিধ এর আরও খবর

পাইকগাছায় বীর মুক্তিযোদ্ধার নামে মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন পাইকগাছায় বীর মুক্তিযোদ্ধার নামে মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
কয়রা উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে নবাগত ওসি’র মতবিনিময় কয়রা উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে নবাগত ওসি’র মতবিনিময়
উপকূলের টেকসই উন্নয়ন ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে উপকূল দিবসে বিশেষ আলোচনা ও মানববন্ধন উপকূলের টেকসই উন্নয়ন ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে উপকূল দিবসে বিশেষ আলোচনা ও মানববন্ধন
খুলনায় দিন ব্যাপী সৌন্দর্য বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত খুলনায় দিন ব্যাপী সৌন্দর্য বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
নড়াইলে গণপ্রকৌশল দিবস পালিত নড়াইলে গণপ্রকৌশল দিবস পালিত
মাগুরায় জাতীয় সমবায় দিবস পালিত মাগুরায় জাতীয় সমবায় দিবস পালিত
কয়রায় মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন কয়রায় মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন
পরিবারের স্বচ্ছলতার জন্য প্রবাসে গিয়ে লাশ ফিরলেন  নাজিমুদ্দিন পরিবারের স্বচ্ছলতার জন্য প্রবাসে গিয়ে লাশ ফিরলেন নাজিমুদ্দিন
এইচএসসিতে বৈষম্যহীন ফলাফলের দাবিতে সচিবালয়ে ঢুকে বিক্ষোভ, আটক ৫৩ এইচএসসিতে বৈষম্যহীন ফলাফলের দাবিতে সচিবালয়ে ঢুকে বিক্ষোভ, আটক ৫৩
মাগুরায় জাতীয় এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন উপলক্ষে প্রেস কনফারেন্স মাগুরায় জাতীয় এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন উপলক্ষে প্রেস কনফারেন্স

আর্কাইভ