শিরোনাম:
পাইকগাছা, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৪ পৌষ ১৪৩১

SW News24
শুক্রবার ● ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রকৃতি » প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ক্ষুদে মৌমাছি
প্রথম পাতা » প্রকৃতি » প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ক্ষুদে মৌমাছি
২২ বার পঠিত
শুক্রবার ● ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ক্ষুদে মৌমাছি

 ---   ক্ষুদে মৌমাছি প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। সচারচ ক্ষুদে মৌমাছি দেখা মেলে খুব কম। গাছের গর্ত বা বড় নারকেল গাছের ছিদ্রের মধ্যে এরা মৌচাক তৈরি করে আবাসস্থল গড়ে তোলে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিবেশে বিপর্যয়ে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে। মৌমাছি এ বিপর্যয়ের মোকাবিলায় টিকে থাকতে পারছে না। তাছাড়া বড় বড় গাছ কেটে ফেলায় তারা আবসস্থল গড়ে তুলতে না পারায় বংশ বৃদ্ধি ব্যহত হচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, তাপমাত্রা বৃদ্ধি, বসবাসের উপযোগী পরিবেশের অভাব, খাদ্যের অভাব, ফসলে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগ, অনাড়ি মধু সংগ্রহকারীদের দিয়ে মৌচাকে অগ্নিসংযোগ করে মৌমাছি পুড়িয়ে হত্যা করাসহ নানাবিধ কারণে মৌমাছি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

মৌচাক হলো মৌমাছির আবাসস্থল। এটি তৈরী হয় মোম জাতীয় পদার্থ দিয়ে। মধু হলো এক প্রকারের মিষ্টি ও ঘন তরল পদার্থ, যা মৌমাছি ও অন্যান্য পতঙ্গ ফুলের নির্যাস হতে তৈরি করে এবং মৌচাকে সংরক্ষণ করে। মধু ভালো শক্তি প্রদায়ী খাদ্য।

কালের বিবর্তনে-প্রাকৃতিক মৌমাছির সংখ্যা অনেক কমে গেছে। আগে বৃক্ষের ডালে, দালানের ছাদের নিচে বা ভেন্টিলেটরে, বন-জঙ্গলে চোখে পড়তো মোমাছি ও মৌচাক। ক্ষুদে মোমাছি ও মৌচাক গাছের কোঠরে মাটির গর্তে  দেখা যেত। কিন্তু মৌমাছির প্রজনন বৃদ্ধি ও বসবাসের পরিবেশের অভাবে মুক্ত মৌমাছি ও মৌচাক কমছে। আর এসব কারণে  ক্ষুদে মৌমাছি প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।

মৌমাছির আবাসস্থলকে বলা হয় মৌচাক। মোম জাতীয় পদার্থ দিয়ে এরা মৌচাক তৈরি করে। মৌচাকে ক্ষদ্র ক্ষুদ্র ষড়ভূজ প্রকোষ্ঠ থাকে। মৌমাছি এসব প্রকোষ্ঠে মধুসঞ্চয় করে। এছাড়া ফাঁকা প্রকোষ্ঠে মৌমাছি ডিম পাড়ে, লার্ভা ও পিউপা সংরক্ষণ করে। মৌমাছি নিজেই দেহাভ্যন্তরে মোম তৈরী করে। শ্রমিক মৌমাছির দেহে আটটি ক্ষুদ্র গ্র্যাণ্ড থেকে মোমশ্বল্ক নি:সৃত হয়। নি:সরণের সময় মোমশ্বল্ক থাকে স্বচ্ছ যা কালক্রমে সাদা ও পরে ঈষদচ্ছ বর্ণ ধারণ করে। সহস্রাধিক মোমশ্বল্ক থেকে এক গ্রাম মোম পাওয়া সম্ভব।
মৌমাছি হলো মধু সংগ্রহকারী এক ধরনের পতঙ্গ। মধু ও মোম উৎপাদন এবং ফুলের পরাগায়ণের জন্য এরা সমধিক পরিচিত। পৃথিবীর সব মহাদেশে, বিশেষ করে যেখানে পতঙ্গ-পরাগায়িত সপুষ্পক উদ্ভিদ আছে, সেখানে এরা থাকে।

পৃথিবীতে মৌমাছির প্রায় বিশ হাজার প্রজাতি আছে। ভারত ও বাংলাদেশে চার প্রজাতির মৌমাছি দেখা যায়।  রকি বা পাহাড়ি মৌমাছি, এরা ভালো মধু সংগ্রাহক এবং এদের প্রতি উপনিবেশ থেকে গড়ে ৫০-৮০ কেজি ফলন পাওয়া যায়৷লিটল বী বা ক্ষুদে মৌমাছি, এরা খুব কম মধু উপন্ন করে এবং প্রতি উপনিবেশ থেকে প্রায় ২০০-৯০০ গ্রাম মধু পাওয়া যায়৷ ইণ্ডিয়ান বী বা ভারতীয় মৌমাছি, এরা বছরে প্রতি উপনিবেশ থেকে গড়ে ৬-৮ কেজি মধু দেয়৷ইউরোপিয়ান বী বা ইউরোপিয় মৌমাছি,  প্রতি উপনিবেশ থেকে গড়ে ২৫-৪০ কেজি মধু পাওয়া যায়। এগুলি ছাড়াও কেরলে আর একটি প্রজাতি পাওয়া যায় যারা হুলবিহীন মৌমাছি নামে পরিচিত। এরা আদৌ হুলবিহীন নয়, প্রকৃতপক্ষে এদের হুল পূর্ণ বিকশিত হয় না৷ তবে এরা খুব ভালো পরাগসংযোজক। এরা বছরে ৩০০-৪০০ গ্রাম মধু উৎপাদন করে।
প্রত্যেকটি মৌচাকে মৌমাছিরা বসতিবদ্ধ হয়ে একটি বড় পরিবার বা সমাজ গড়ে বাস করে ৷আকার ও কাজের ভিত্তিতে মৌমাছিরা তিন সম্প্রদায়ে বিভক্ত। রানি মৌমাছি যা একমাত্র উর্বর মৌমাছি, ডিম পাড়তে সক্ষম, ড্রোন বা পুরুষ মৌমাছি ও কর্মী মৌমাছি বা বন্ধ্যা মৌমাছি।
ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়ানোর সময় মৌমাছিরা তাদের পা এবং বুকের লোমের ফুলের অসংখ্য পরাগরেণু বয়ে বেড়ায়। এক ফুলের পরাগরেণু অন্য ফুলের গর্ভমুণ্ডে পরলে পরাগায়ণ ঘটে, যার ফলশ্রুতিতে উৎপন্ন হয় ফল। এভাবে মৌমাছিরা পরাগায়ণের মাধ্যমে হিসাবে কাজ করে ফলও ফসলের উৎপাদন বাড়ায়।





আর্কাইভ