সোমবার ● ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » আঞ্চলিক » শাকবাড়ীয়া খালের দু’পাশে অবৈধ স্থাপনা থাকায় অনিশ্চিত সেতু নির্মাণ
শাকবাড়ীয়া খালের দু’পাশে অবৈধ স্থাপনা থাকায় অনিশ্চিত সেতু নির্মাণ
অরবিন্দ কুমার মণ্ডল, কয়রা, খুলনাঃ খুলনার কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের শাকবাড়ীয়া খালের দু’পাশে দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না হওয়ার কারণে সেতু নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে।
মহারাজপুর ইউনিয়নের শাকবাড়ীয়া খালের দু’পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে ব্যর্থ হয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘এসএ-জেডটি জেভি’ প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে চলে গেছে। প্রায় ২ বছর ধরে জায়গা দখলমুক্ত করার চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় তারা এই সিদ্ধান্ত নেয়।
পরবর্তীতে প্রশাসনের সহযোগীতায় শাকবাড়ীয়া খালের দক্ষিণ পাশের অংশটি দখলমুক্ত হলেও উত্তর পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি।
জানা গেছে, কয়রা সদর হতে মহেশ্বরীপুর ইউনয়নের গিলাবাড়ি জিসি সড়কটি মহারাজপুর ইউনিয়নের বড়ব্রীজ নামে পরিচিত শাকবাড়ীয়া খালের সেতুটি এলাকাবাসীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলার আঘাতে সেতুটি ভেঙে যায়। ফলে কয়রা সদর হতে মহারাজপুর ও মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ব্রিজটির গুরত্ব বিবেচনা করে ২০২২ সালের ৩ আগস্ট স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) থেকে ৩৬ মিটার আরসিসি গার্ডার সেতুর নির্মাণকাজের জন্য ‘এসএ-জেডটি জেভি’ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে। কিন্তু শাকবাড়ীয়া খালের দু’পাশে দখল করে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না হওয়ার কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করতে পারেনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন স্থানীয়বাসিন্দা বলেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের ভাগ্নে মাসুম বিল্লাহ ও তার দলীয় নেতাকর্মীদের সহযোগীতায় খালের দু’পাশে আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয়, দোকানপাট ও পাকা স্থাপনা গড়ে তুলেছিল। যা সেতুর নির্মাণে বাধা সৃষ্টি করে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান উপজেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেও কোনো সমাধান পায়নি। ফলে বাধ্য হয়ে এক পর্যায়ে কাজ বন্ধ রেখে চলে যায়। এখনো সেতু নির্মাণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধি গোলাম রব্বানী বলেন, সেতুটি নির্মিত না হওয়ার কারণে মহারাজপুর, মহেশ্বরীপুর ও বাগালী ইউনিয়নের লক্ষাধিক জনসাধারণ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। এই বছর বর্ষা মৌসুমে আমন আবাদের সময় জলাবদ্ধতার কারণে ৩টি ইউনিয়নের কৃষকদের প্রায় কোটি টাকার ধানের বীজতলা নষ্ট হয়েছে। সেতুটি দ্রুত নির্মাণের জন্য স্থানীয় জনসাধারণকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও উপজেলা প্রশাসনকে সহযোগীতা করা উচিত।
কয়রা উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মোহাম্মদ দারুল হুদা বলেন, অবৈধ স্থাপনা সরানোর চেষ্টা করা হলেও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা তালবাহানা করছেন। তবে আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থাপনা সরিয়ে সেতু নির্মাণ কাজ আবার শুরু করা যাবে।
কয়রা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাস বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ব্রীজের দু’পাশের জনসাধারণকে বুঝিয়ে অবৈধ স্থাপনা সরানোর নির্দেশ দিয়েছিলাম। খালের দক্ষিণ পাশের স্থাপনা ইতিমধ্যে সরানো হয়েছে। তবে উত্তর পাশের স্থাপনা এখনো সরানো হয়নি শুনেছি। অবৈধ স্থাপনা দ্রুত সময়ের মধ্যে উচ্ছেদ করে সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।