মঙ্গলবার ● ২ আগস্ট ২০১৬
প্রথম পাতা » কৃষি » পাইকগাছার লবণাক্ত মাটিতে ড্রাগণ চাষ করে সফল হয়েছেন কৃষক সবুর মোড়ল
পাইকগাছার লবণাক্ত মাটিতে ড্রাগণ চাষ করে সফল হয়েছেন কৃষক সবুর মোড়ল
প্রকাশ ঘোষ বিধান ॥
উপকূলীয় অঞ্চলের লবণাক্ত পাইকগাছায় ড্রাগণ এর চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছে কৃষক মোঃ সবুর আলী মোড়ল। উপজেলার গোপালপুর গ্রামে তার ক্ষেতে ড্রাগণ চাষ করে আশাতীত ফলন পেয়েছে। ড্রাগণ ফল এলাকায় নতুন ও অত্যান্ত লাভজনক হওয়ায় বিভিন্ন এলাকা থেকে দর্শনাথিরা কৃষক সবুর মোড়লের ড্রাগণ ক্ষেত পরিদর্শন করছে। ইতিমধ্যে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর ও উর্দ্ধতন কৃষি কর্মকর্তারা সবুর মোড়লের ড্রাগণ ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন। ড্রাগণ লাভজনক ফসল হওয়ায় এলাকার অনেকেই তার দেখাদেখি ড্রাগণ চাষের উদ্বুদ্ধ হয়েছে। তারা সবুর মোড়লের কাছ থেকে চারা সংগ্রহ ও চাষাবাদ পদ্ধতি জেনে ক্ষেতের চাষাবাদ শুরু করেছে। জানাগেছে, ড্রাগণ মধ্য এশিয়ার একটি অতি পুষ্টিকারী ফল। আমাদের দেশে ভিয়েতনাম থেকে এই ফলের চারা আনা হয়েছে। ড্রাগণ গাছ দেখতে অনেকটা এলাকার নেড়াসেজ গাছের মতো। এর কোন পাতা নেই। সবুজ কান্ড থেকে গাছের চারা তৈরী হয়। এপ্রিল মাস গাছ ফুল আসে, ড্রাগণের কান্ডে ফুল ধরে এবং জুন থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। ড্রাগণ ফল কাঁচা অবস্থায় সবুজ ও পাঁকলে লাল টকটকে রঙ্গে পরিণত হয়। এক একটি ফল ২০০ থেকে ৮০০ গ্রাম পর্যন্ত ওজন হয় বলে জানাগেছে। ড্রাগণ চাষী সবুর মোড়ল জানান, গত ১৪ সালে পাইকগাছার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ বিভাস চন্দ্র সাহা তাকে ড্রাগণ চাষে উদ্বুদ্ধ করে এবং দৌলতপুর হার্টিকালচার থেকে প্রশিক্ষণ নেয়। হার্টিকালচার থেকে বিনামূল্যে সবুর মোড়লকে ড্রাগণের ৫টি জাতের ৮০টি চারার প্রদান করা হয়। দৌলতপুর হার্টিকালচারে উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মিজানুর রহমান কৃষক সবুর মোড়লের ক্ষেতে এসে ড্রাগনের চারা রোপন করে ড্রাগণাবাদে উদ্বুদ্ধ করেন। এরপর সবুর মোড়ল ৮০টি চারা তার ক্ষেতে রোপন করে এবং প্রতিটি গাছের সাথে একটি করে খুঁটি বসিয়ে গাছ বেধে দেয়। ১৫ সালে প্রথম ফুল আসলেও ফল ধরেনি। চলতি বছর প্রতিটি গাছে ৪/৫টি করে ফল ধরেছে এবং নতুন করে ফুলও ফুটছে। ড্রাগণ এলাকায় জনপ্রিয় হওয়ায় এক একটি ফল ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি করছে এবং কেজি প্রায় ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি করছে। তার ক্ষেতের উৎপাদিত ড্রাগণ ফল ২ থেকে ৩শ গ্রাম ওজন হয়েছে। তাছাড়া সবুর মোড়ল ড্রাগণ গাছ থেকে চারা উৎপাদন করেছে। তার ক্ষেতে এখন প্রায় ২ হাজার চারা রয়েছে। এক একটি চারা ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সবুর মোড়ল আরো জানান, লবণাক্ত এলাকায় ড্রাগণ চাষে সে সফল হওয়ায় এলাকার অন্যান্য কৃষকদের ড্রাগণাবাদে উদ্বুদ্ধ করছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের কৃষিবিদ এএইচএম জাহাঙ্গীর আলম জানান, ড্রাগণ অতি পুষ্টিগুণে ভরে একটি ফল। লবণাক্ত এলাকায় ড্রাগণের ফলন ভাল হয়। উপজেলার গোপালপুর গ্রামের কৃষক সবুর মোড়ল ছাড়াও দেলুটি এলাকায় ড্রাগণের আবাদ হচ্ছে। কৃষি অফিস থেকে উপজেলা কৃষকদেরকে ড্রাগণাবাদে উদ্বুদ্ধ ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।