শিরোনাম:
পাইকগাছা, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২১ মাঘ ১৪৩১

SW News24
সোমবার ● ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
প্রথম পাতা » নারী ও শিশু » পাইকগাছায় গোবরের তৈরী শলকা মেটাচ্ছে জ্বালানীর চাহিদা
প্রথম পাতা » নারী ও শিশু » পাইকগাছায় গোবরের তৈরী শলকা মেটাচ্ছে জ্বালানীর চাহিদা
২৯ বার পঠিত
সোমবার ● ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

পাইকগাছায় গোবরের তৈরী শলকা মেটাচ্ছে জ্বালানীর চাহিদা

 ---            পাইকগাছা উপজেলায় জ্বালানি হিসেবে কাঠের বিকল্প হিসেবে গোবরের তৈরি মশাল বা শলকার চাহিদা বাড়ছে। গ্রামাঞ্চলে শুকনো মৌসুমে গোবর লাঠিতে পেঁচিয়ে শুকিয়ে সারা বছর ব্যবহার করা যায় এই মশাল বা শলকা। গরুর গোবর দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে মশাল বা গোবরের শলকা। সাশ্রয়ী জ্বালানী ব্যবহারের জন্য গরুর গোবরের তৈরি মশাল বা শলকা পাইকগাছার গ্রামাঞ্চলের গরিব গৃহবধূদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তাই সম্প্রতি শীতের সময় উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে গরুর গোবর দিয়ে মশাল তৈরির ধুম পড়েছে।

উপজেলা বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বিশেষ করে নিম্নবিত্ত পরিবারের বধূরা গৃহপালিত গরুর গোবরের লাকড়ি তৈরিতে মেতে উঠেছেন। তারা সকালে ঘুম জেগে গোয়াল ঘরে প্রবেশ করেন। ঝুড়ি ভর্তি গোবর বের করেন। গোবরের সাথে মিশ্রিত করা হয় আংশিক পরিমাণের ধানের তুষ ব কুড়া। এরপর ২/৩ফুট লম্বা পাটের শলা বা বাঁশের চিকন লাঠি দিয়ে গৃহবধূরা তৈরি করেছেন মশাল। এসব তৈরিকৃত কাঁচা গবরের শলকা শুকানোর জন্য বাড়ির উঠানে রোদে দাঁড় করে রাখা হয়। এছাড়াও মুঠো বা চেপটা করে গাছের গায়ে বা দেওয়ালে লাগিয়ে রোদে শুকিয়েও ব্যবহার করা হয়। রোদের তাপমত্রা থাকলে ২/৩দিন পরই শুকিয়ে যায় শলকাগুলো। এভাবে নিত্যদিনের তৈরি শুকনো লাকড়ি মজুদ রাখা হয় নিজ ঘরে।---

উপজেলার বিভিন্ন উনিয়ানের গ্রামে গ্রামে গোবরের শলা বা মশাল তৈরিতে ব্যস্ত দরিদ্র পরিবারের মহিলারা। স্থানীয় ভাষায় গোবরের জ্বালানি হিসেবে শলাকে মশাল বা বড়ে বলে। তাছাড়া গোবর থেকে ঘুঁটে, নুড়ে ও চাপটা তৈরি করা হয়। গদাপুর গ্রামের সুফিয়া বেগম জানান, তার স্বামী জন দিযে যা উপার্জন করে তা দিয়ে সংসার চলে না। ঘরের জ্বালানি চাহিদা মিটিয়ে গোবরের মশাল বিক্রি করে যে টাকা পান তিনি তা সংসারে খরচ করেন। গোবরের শলা ভালভাবে শুকানোর পর ঘরের প্রয়োজন মিটিয়ে বাদবাকি বিক্রি করেন। একশত মশাল দুইশত টাকা দরে বিক্রি হয়। ব্যবসাহীরা গ্রামে ঘুরে পাকারি দরে মশাল ক্রয় করে তা বাজারে বিক্রি করে। তিনি আরো জানান,এ উপজেলায় মাছের লিজ ঘেরেও গোবরের তৈরি শলার চাহিদা রয়েছে। জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত পাটখড়ির পাশাপাশি গোবরের তৈরি শলকা দিয়ে নিজেদের জ্বালানি সমস্যা তো দূর হচ্ছে আবার তা বাজারে বিক্রি করে সংসারের অভাব দূর করছেন।

 উপকূলের এ উপজেলায় দিন দিন জ্বালানী সংকট মারাত্বক আকার ধারণ করছে। জ্বালানী সংকটের কারণে সবচেয়ে বেশি কষ্ট করতে হচ্ছে গ্রামাঞ্চলের নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র জনগোষ্ঠির পরিবারগুলোকে। জ্বালানির অভাবে রান্না করতে অনেক সমস্যায় পড়তে হয় গরীব গৃহিণীদের। এছাড়া দফায় দফায় গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেকে গ্যাসের ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছে। যার ফলে জ্বালানী কাঠের উপর দিন দিন চাপ বেড়েই চলেছে। জ্বালানী সংকট মোকাবেলায় গোবরের শলার জ্বালানী তৈরি হচ্ছে পুরোদমে। আর গোবরের শলার জ্বালানীর চাহিদা মেটানোর পর বিক্রি করে অভাব দূর করছেন অভাবগ্রস্থ পরিবারের গৃহিণীরা।

জ্বালানি সংকটের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে গোবরের তৈরি শলকা। এ ব্যাপারে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রেশমা আক্তার বলেন, কিছুদিন আগে এর ব্যবহার ছিল গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ। কিন্তু বর্তমানে জ্বালানি সংকট ও দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন প্রায় সব শ্রেণির মানুষ এ গোবরের শলা স্বল্পমূল্যে কিনে জ্বালানি হিসেবে রান্নার কাজে ব্যবহার করছে। গ্রামীণ দরিদ্র পরিবারের মহিলারা গোবরের শলা তৈরি করে নিজেদের জ্বালানির চাহিদা মিটিয়েও তা বিক্রি করে সংসারের খরচ চালিয়ে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

 





আর্কাইভ