শিরোনাম:
পাইকগাছা, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১

SW News24
বৃহস্পতিবার ● ১৩ মার্চ ২০২৫
প্রথম পাতা » অপরাধ » মাগুরায় শিশু আছিয়ার গ্রামের বাড়িতে শোকের ছায়া
প্রথম পাতা » অপরাধ » মাগুরায় শিশু আছিয়ার গ্রামের বাড়িতে শোকের ছায়া
২০ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার ● ১৩ মার্চ ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

মাগুরায় শিশু আছিয়ার গ্রামের বাড়িতে শোকের ছায়া

---
মো: শাহীন আলম তুহিন,মাগুরা থেকে :  টানা ৭ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে  বৃহস্পতিবার অবশেষে হেরে গেল ধর্ষিত শিশু আছিয়া খাতুন। আলোচিত এ শিশুকে নিয়ে সারা দেশে হয়েছে বিক্ষোভ মিছিল। শিশু ধর্ষকের ফাঁসি চেয়ে শিক্ষার্থী,জনতাসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ ছিল রাস্তায়। ঘেরাও করেছে আদালত চত্বর,বিচার চেয়ে দেওয়া হয়েছে স্মারক লিপি। গত বৃহস্পতিবার বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষনের শিকার হয় শিশুটি। এ ঘটনায় গত শনিবার দুপুরে শিশুটির মা আয়েশা আক্তার বাদী হয়ে মাগুরা সদর থানায় ৪ জনের নামে মামলাটি করেন। মামলার ৪ জন আসামী হলেন হিটু শেখ (৫০),জহেরা বেগম (৪২),রাতুল শেখ (২২) ও সজিব শেখ (১৮) ।
এদিকে,শিশু আছিয়ার মৃত্যুর খবর নিজ বাড়ী মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার সব্দালপুর ইউনিয়নের জারিয়া গ্রামে পৌছালে সেখানে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে তার পরিবারের আতœীয়-স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশির মধ্যে। মাগুরার বিভিন্ন স্থান থেকে শত শত মানুষ ছুটে আসে আছিয়াদের বাড়িতে। পুরো এলাকায় হয়ে পড়ে শোকাচ্ছন্ন । মাঠপাড়া  শিশু,কিশোর-কিশোর,নারী-পুরুষসহ নানা বয়সী মানুষের একটাই দাবী ধর্ষকের ফাঁসি চাই,ফাঁসি । এ ঘটনার শাস্তি দাবী করে তারা ।
স্থানীয় বাসিন্দা হামিদুর রহমান বলেন,আজ আছিয়া আমাদের মাঝ থেকে চলে গেল । তাকে আমরা বাঁচাতে পারলাম না । আমরা চাই ধর্ষকের ফাঁসি । আজ একজন মা হারাল তার সন্তানকে। সন্তান হারানো বেদনা খুবই কষ্টের। আমরা শোক সন্তত পরিবারের সাথে আছি ।
এলাকার প্রতিবেশী কৃষ্ণ বালা বলেন,আছিয়ার মৃত্যুর খবরে আমি খুবই ব্যতীত হয়েছি। আমি ২ সন্তানের জননী। যে শিশু আজ অনেক সে আমাদেরই সন্তান । আমরা আমাদের সন্তানকে যারা পৃথিবী ছাড়া করলো তাদের সবাই বিচাই চাই।
শিশু ফুফুতো ভাই রাসেল কাঁদো কন্ঠে বলেন,আমাদের আছিয়া আর নেই। আমি কার সাথে খেলা করবো,কে আমাকে ভালোবাসবে। এ ঘটনার পর থেকেই আমি সব সময় ঢাকার আমাদের পরিবারের সবার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করছি আর আল্লাহর কাছে সব সময় দোয়া করছি সে যেন বেঁচে ওঠে ।
শিশুটির চাচা ইব্রাহিম শেখ বলেন, আছিয়ার মৃত্যুর খবরে আমাদের গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মাগুরা বিভিন্ন স্থানের মানুষ আমাদের বাড়িতে ছুটে আসছে। ঢাকা থেকে তার মৃত্যুর খবর শোনা মাত্র আশি আমার আতœীয়-স্বজন,পাড়া প্রতিবেশিদের মাঝে জানায়। মেয়েটির বাবা মানষিক প্রতিবন্ধী। সে ভালোভাবে কথাবর্তা বলতে পারে না। আমি সব সময় আছিয়ার পরিবারের সাথেই থাকবো। এ ঘটনার প্রকৃত দোষীদের সর্ব্বোচ শাস্তি দাবী রেখে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
আছিয়ার পারিবারিকসূত্রে জানা যায়, তার মরদেহ আজ বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার যোগে মাগুরাতে পৌছাবে। তারপর এশা নামাজের পর জানাযা শেষে আছিয়ার আদি নিবাস শ্রীপুরের সোনাইকুন্ডীতে দাফন করা হবে।
এদিকে, শিশু আছিয়ার মৃত্যুর খবর মাগুরা শহরে পৌছালে ছাত্র-জনতা বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও আদালত চত্বর ঘেরাও করে। তারা মুল ধর্ষকের ফাঁসি চেয়ে নানমুখী শ্লোগান দিতে থাকে।
শিক্ষার্থী মিনহাজ ,বাকের,রানাসহ অনেকে বলেন,আমাদের বোনের মৃত্যু হয়েছে। আমাদের আজ খুবই শোকাহত। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের যতক্ষণ পর্যন্ত ফাঁসি না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব। আমরা এ সপ্তাহ ধরেই ধর্ষকের শাস্তির জন্য রাস্তায়,রাস্তায় মিছিল করছি । এ ঘটনার সাথে সকলের ফাঁসি দাবী রাখছি আমরা।
শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে তার গ্রামের পাশাপাশি মাগুরা শহরেও নানা শ্রেণি পেশার মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার এ মৃত্য কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না অনেকে। এত অল্প বয়য়ে একটি শিশু নির্মমভাবে নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গেল তা কাম্য নয়।
মাগুরা অন্যতম কবি শিকদার ওয়ালিউজ্জামান বলেন,শিশু আছিয়া একটি স্বপ্ন ,একটি ফোটোন্ত গোলাপের নাম। আজ আছিয়া আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে গেল। একটি স্বপ্নে ইতি ঘটলো। এ ঘৃন্য জঘন্য কাজের সাথে জড়িতদের শাস্তি দাবীতে আমরাও রাস্তায় স্বোচ্ছার ছিলাম।
মাগুরা ইতিহাস গবেষক ডা.তাসুকুজ্জামান বলেন, নিষ্পাপ এ শিশুটি আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে গেল। আছিয়া আর আমাদের মাঝে আসবে না। কিন্তু তার স্মৃতিগুলো রয়ে গেল আমাদের চোখের পাতায়। কিছু ঘটনা হলো কলংকিত। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের আমি সর্ব্বোচ শাস্তির দাবী জানাচ্ছি। আছিয়া ভালো থাক পরপারে।
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আইয়ুব আলী বলেন,মহদেহ ময়না তদন্ত শেষে রাতে মাগুরায় পৌছাবে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।





আর্কাইভ