শিরোনাম:
পাইকগাছা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩১

SW News24
বুধবার ● ২৫ মার্চ ২০১৫
প্রথম পাতা » পরিবেশ » সুন্দরবনের গোলপাতা বিক্রি শুরু হয়েছে; আগের তুলনায় চাহিদা কম
প্রথম পাতা » পরিবেশ » সুন্দরবনের গোলপাতা বিক্রি শুরু হয়েছে; আগের তুলনায় চাহিদা কম
১২৬২ বার পঠিত
বুধবার ● ২৫ মার্চ ২০১৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

সুন্দরবনের গোলপাতা বিক্রি শুরু হয়েছে; আগের তুলনায় চাহিদা কম

প্রকাশ ঘোষ বিধান--- : সুন্দরবন থেকে আহরণকৃত গোলপাতা পাইকগাছায় বিক্রি জমে উঠতে শুরু করেছে। বনের গোলপাতা কাটা শেষ হয়েছে। এখন পরিবহন, মজুদ ও বিক্রির পালা শুরু হয়েছে। পাইকগাছা উপজেলার নদ নদী সংলগ্ন বিভিন্ন হাটবাজার ও মোকামে গোলপাতার মজুদ ও বিক্রি হচ্ছে। পাইকগাছা পৌর বাজারে ট্রলার ঘাট, থানার সামনে, শিববাটী, আলমতলা, চাঁদখালী, চাঁদালী, আগড়ঘাটা, কপিলমুনি বাজারে গোলপাতার মজুদ ও বিক্রি চলছে। তাছাড়া উপকুল এলাকার কয়রা, আশাশুনি, দাকোপ, নলিয়ান, বটিয়াঘাটা, শ্যামনগর, মোংলা ও খুলনার বিভিন্ন হাট বাজারে গোলপাতার বিক্রি জমে উঠতে শুরু করেছে।

গোলপাতা গোল নয়, দেখতে নারিকেল গাছের পাতার মতন। ঘরের চালে গোলপাতার ছাউনি উপকুল সহ বিভিন্ন জেলায় খুব জনপ্রিয়। এ পাতার ছাউনি ঘর গরমের সময় ঠান্ডা ভাব এবং শীতের সময় গরমভাব অনুভুত হয়। গোলপাতা দিয়ে ভালভাবে ঘরের ছাউনি দিলে ৩/৪ বছর পার হয়ে যায়। উপকুল সহ যশোর, মাগুরা, রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় গোলপাতার চাহিদা রয়েছে। গোলপাতা খুচরা ও পাইকারী বিক্রি হচ্ছে। আড়ৎ থেকে ব্যবসায়ীরা ট্রাক, ইঞ্জিন ভ্যান, ট্রলারযোগে বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করছে। গোলপাতা ব্যবসায়ী সূত্রে জানাগেছে, গোলপাতার মজুদ প্রায় শেষ এখন বিক্রির পালা। বিগত বছর গোলপাতার ব্যবসা ভাল ছিল না। এ বছর কিছুটা ব্যবসা হতে পারে বলে তারা ধারনা করছে। সবে মাত্র গোলপাতা বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রায় আষাঢ় মাস পর্যন্ত বিক্রি হবে। তাছাড়া বৃষ্টি শুরু হলে গোলপাতার বিক্রি বেড়ে যাবে। এ বিষয়ে  গোলপাতা ব্যবসায়ী নলিয়ানের গোলাম রসুল, পাইকগাছার মোতলেব সরদার, জিনারুল ইসলাম জানান, গোলপাতা পরিবহনের জন্য একটি নৌকা ২টি ট্রিপ দিতে পারে। বড় নৌকায় ব্যবসায়ীদের হিসাবে প্রায় ৯০/১০০ কাউন, ছোট নৌকায় ৭০/৮০ কাউন বহন করতে পারে। তারা জানায়, বনের গোলপাতা কাটা শেষ হয়েছে, কাটা গোলপাতা যা আছে তা বহন করা হচ্ছে। প্রতি নৌকায় ৯জন বাওয়ালী গোলপাতা কাটা, আহরন ও মজুদের কাজে নিয়োজিত থাকে। প্রতি বড় নৌকায় গোলপাতা বহনে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজির টাকা খরচ হয় এবং ছোট নৌকায় প্রায় দেড় লাখ টাকা খরচ হয়। নৌকা প্রতি গোল বিক্রি করে ২৫/৩০ হাজার টাকা লাভ হয়। গোলপাতার হিসাবে খুচরা কাউন ২৮০০ টাকা থেকে ৩০০০ টাকা ও পাইকারী ২৪ শত টাকা থেকে ২৫ শত টাকা বিক্রি হচ্ছে। ১ পন গোল অর্থাৎ ৮০টি গোল ২/৩ শত টাকা খুচরা বিক্রি হচ্ছে। বাওয়ালী সূত্রে জানাগেছে, গোলপাতা কাটার পাশ পারমিট পেতে বিড়ম্বনা ও গোলপাতার মন প্রতি ধার্য্য কর বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া জলদস্যুদের চাঁদা, মুক্তিপণ ও উপরিখরচ বহন করে আগের মত লাভ হচ্ছে না। তাছাড়া বনে আগের মত ভালো মানের বড় গোলপাতা পাওয়া যাচ্ছে না। তারপরও ব্যবসায় টিকিয়ে  রাখার জন্য জীবন বাজি রেখে গোলপাতা কাটতে হয়। তাছাড়া একটি বড় নৌকা তৈরী করতে  ইঞ্জিন সহ আনুসাঙ্গিক খরচ দিয়ে প্রায় ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়। প্রতি বছর পুরোনা নৌকা মেরামত করতে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। এ সব খরচ মিটিয়ে গোলপাতা ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হিমসীম খাচ্ছে। তারপরও মৌসুম শুরু হলে ব্যবসায়ীরা সকল বাধা অতিক্রম করে ব্যবসা টিকিয়ে রাখার জন্য গোলপাতা আহরন করে চলেছে। সুন্দরবনে গোলপাতা আহরনের সময় বাওয়ালীদৈর পর্যাপ্ত নিরাপত্তা থাকলেও বনদস্যুদের হাত থেকে বন জীবিরা রেহায় পায় না। নানা কৌশলে বনজীবি ও বাওয়ালীদের কাছ থেকে চাঁদা ও মুক্তিপণ আদায় করে চলেছে। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরও কঠোর পদপে গ্রহন করলে বাওয়ালীরা নির্বিঘেœ গোলপাতা আহরন করতে পারে বলে বাওয়ালীরা দাবী করেছে।





আর্কাইভ