শিরোনাম:
পাইকগাছা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩১

SW News24
শুক্রবার ● ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » উপ-সম্পাদকীয় » পরিবেশ সুরক্ষায় ওজোন স্তর সুরক্ষা জরুরী
প্রথম পাতা » উপ-সম্পাদকীয় » পরিবেশ সুরক্ষায় ওজোন স্তর সুরক্ষা জরুরী
৭৫৭ বার পঠিত
শুক্রবার ● ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

পরিবেশ সুরক্ষায় ওজোন স্তর সুরক্ষা জরুরী

---

প্রকাশ ঘোষ বিধান

পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের উপরি ভাগে ওজোন স্তর অবস্থিত। ভূ-পৃষ্টের উপরি ভাগের ২০ কিঃমিঃ থেকে ৫০ কিঃমিঃ পর্যন্ত ওজোন স্তর বি¯তৃত। ওজোন হলো তীব্র গন্ধযুক্ত হালকা নীল বর্ণের গ্যাসীয় পদার্থ। এটি একটি অস্থায়ী গ্যাস। এর সামগ্রীক স্ট্রটোস্ফিয়ারকে ওজোন স্তর বলা হয়। সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি ওজোনস্তর আটকে রেখে পৃথিবীর জীবজগতকে রক্ষা করে আসছে। কিন্তু প্রযুক্তি ও শিল্প উন্নয়নের সাথে সাথে মানুষের অসচেতন কর্মকাণ্ডে ক্ষতিকর গ্যাস বায়ুমন্ডলে নিঃসরণের কারণে ওজোন স্তর ক্রমাগত ক্ষয়ে যাচ্ছে। ১৯৭৪ সালে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় জানাযায়, বায়ুমন্ডলে ক্রমাগত ক্লোরোফ্লোরো কার্বন বা সিএফসি গ্যাস বৃদ্ধির ফলে ওজোনস্তর ক্ষয়ে যাচ্ছে। বিশ্ব উষ্ণায়নে কার্বন-ডাই-অক্সাইড, নাইট্রাস অক্সাইড, মিথেন, ক্লোরোফ্লোরো কার্বন বা সিএফসি গ্যাসগুলো ব্যাপক ভূমিকা রাখে। আর মানুষের কর্মকান্ডে বায়ুমন্ডলে ক্রমাগত এ সব গ্যাস বেড়ে চলেছে। বায়ুমন্ডলে পুঞ্জিভূত গ্রীনহাউস গ্যাস উৎসারণের কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিতে নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সৃষ্টি হচ্ছে।

১৬ সেপ্টেম্বর বিশ্ব ওজোন দিবস। বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হচ্ছে। জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনইপি) উদ্যাগে ক্ষয়িষ্ণু ওজোনস্তর সংরক্ষণ এবং ক্ষয়কারী বস্তুগুলোর ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে পূর্বাবস্থায় ফিরে আনার লক্ষে কানাডার মণ্ট্রিল শহরে ১৯৮৭ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর গৃহিত হয় মন্ট্রিল প্রটোকল। এরপর ১৯৯৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের গৃহিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওজোনস্তর সংরক্ষণে বিশ্ব ব্যাপী গণসচেতনয়তা সৃষ্টির লক্ষে ১৯৯৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে আন্তর্জাতিকভাবে ওজোন দিবস পালন হয়ে আসছে। ১৯৯৫ সাল থেকে বাংলাদেশেও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে দিবসটি পালন করেছে।

সূর্যের ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট বা অতিবেগুনি রশ্মি থেকে প্রাণী ও উদ্ভীদ জগতকে রক্ষা করে আসছে ওজোন স্তর। এ স্তরে ওজোন নামক তীব্র গন্ধযুক্ত বিষাক্ত হালকা নীল গ্যাস ধোঁয়ার মত বলায়ে ছড়িয়ে থাকে। সূর্যের আল্ট্রাভায়োলেট বা অতিবেগুনি রশ্মি ওজোনস্তর শোষন করে বায়ুমন্ডলের উষ্ণতা ভারসাম্য রক্ষা করছে। কিন্তু ওজোনস্তর ক্ষয়ের কারণে সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি পৃথিবীতে সরাসরি প্রতিফলিত হচ্ছে। পৃথিবীর যে সব অঞ্চলে ওজোন স্তর ক্ষয় হচ্ছে ঐ অঞ্চলে সরাসরি সূর্যের আল্ট্রাভায়েলেট রশ্মি প্রবেশ করছে। এর ফলে প্রাণী ও উদ্ভিদ জগতের উপর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। মানুষের শরীরে রোগব্যাধি বাড়ছে, প্রতিরোধ ক্ষমতা কমছে, আর মানুষের চোখে ছানিপড়া, ঘা-পাঁচড়া, ত্বকের ক্যান্সর, সামগ্রীক খাদ্য শৃংখলা বিনষ্ট সহ নানা সংকটের সৃষ্টি হচ্ছে। আগের তুলনায় মানুষের আয়ু বাড়লেও নানা ধরণের রোগব্যাধিতে জর্জারিত হচ্ছে।

বিশ্বে দিন দিন জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষের ক্ষয়বর্ধমান ও অপরিনামদর্শিতার জন্য বনজ সম্পদ উজাড় হচ্ছে। এতে পৃথিবীর বায়ুমন্ডল উত্তপ্ত হচ্ছে। প্রকৃতি তার ভারসম্য হারাচ্ছে। শিল্প কলকারখানা প্রভৃতি থেকে সিএফসি গ্যাস রায়ুমন্ডলে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনে নান প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্ম নিচ্ছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য উন্নত বিশ্বই দায়ী। কিন্তু পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি রোধের ব্যাপারে তাদের ভূমিকা খুবই কম। উন্নত বিশ্ব দীর্ঘদিন ধরে কলকারখানা থেকে সিএফসি গ্যাস বায়ুমন্ডলে নিঃসরণ করে বিশ্ব উষ্ণতা বদ্ধি করে চলেছে। উন্নত বিশ্বকে এ ব্যাপারে অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে হবে। এ পৃথিবীকে মানুষের বসবাস যোগ্য রাখার জন্য কালো ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণ করে বাতাসকে নির্মল রাখা এবং উষ্ণতা রোধে উন্নত বিশ্বকে প্রযুক্তিগত ব্যবহারের পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরী। পাশাপশি বৈশ্বিক উষ্ণতা ও ওজোনস্তর ক্ষয়রোধে নেতিবাচক সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে।





আর্কাইভ