সোমবার ● ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » কৃষি » পাইকগাছার লবণাক্ত মাটিতে মালটা চাষে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে আক্তারুল গাজী
পাইকগাছার লবণাক্ত মাটিতে মালটা চাষে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে আক্তারুল গাজী
প্রকাশ ঘোষ বিধান ॥
উপকূলের লবণাক্ত পাইকগাছার মাটিতে মালটা চাষ করে সফল হয়েছেন কৃষক আক্তারুল গাজী। তিনি এক বিঘা জমিতে মালটা বাগান ও আরো এক বিঘায় মালটা চারা তৈরী করেছেন। উপজেলা গদাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে তার মালটা বাগান ও নার্সারী। মেইন সড়কের সাথে মালটা বাগান করায় তাড়াতাড়ি পরিচিতি ছড়িয়ে পড়েছে। উপকূলের লবণাক্ত মাটি ও বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে মালটা চাষ করে তিনি ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে। এ মৌসুমে প্রায় ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা মালটা ও ২ লক্ষ টাকা মালটার চারা বিক্রি করেছেন। এখনো গাছে প্রচুর পরিমাণ মালটা ফল রয়েছে। তার একক প্রচেষ্টায় এ সফলতা অর্জন করেছেন। মালটা চাষী আক্তারুল জানান, পাইকগাছা উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে কেউ এখন পর্যন্ত খোজ খবর নেয়নি। এখানে মালটা চাষ হচ্ছে হয়তো তারা জানেই না।
জানাগেছে, পাইকগাছা উপজেলার গদাইপুর গ্রামে আক্তারুল গাজীর বাড়ী। তিনি গদাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে দীর্ঘদিন যাবৎ ৭-৮ বিঘা জমি লিজ নিয়ে বিভিন্ন ফলদ ও উদ্ভিত জাতীয় বৃক্ষের নার্সারী গড়ে তুলেছে। ৫-৬ বছর পূর্বে এলাকার নার্সারী মালিক আমিন দপ্তরী তার নার্সারী ব্যবসা বন্দ করে দিলে তার নার্সারী থেকে আক্তারুল এক ফুটের কিছু মালটার চারা ক্রয় করে নিজের নার্সারীতে রোপন করে। গত ৩-৪ বছরে তিনি প্রায় ১ বিঘা জমিতে নার্সারী বাগান ও ১ বিঘা জমিতে নার্সারীর চারা তৈরী করে। তার বাগানে বিগত ২ বছর মালটা ধরলেও আশানুরুপ বিক্রি হয়নি। তার কারণ নার্সারীতে চারা ক্রয় করতে আসা ক্রেতারা মালটা ফল বিনা মূল্যে নিয়ে যেত। এ বছর তার খেতে ব্যাপক ফলন হয়েছে। এ পর্যন্ত ফল বিক্রি হয়েছে প্রায় ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা এবং গাছে প্রচুর ফল রয়েছে। তাছাড়া নার্সারী থেকে চারা ক্রেতারা বিনামূল্যে অনেক মালটা ফল নিয়ে যাচ্ছে। আক্তারুল নার্সারীর ব্যবসার পাশাপাশি লবণাক্ত মাটিতে মালটা বাগান তৈরী করে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে। তিনি জানান, তার ১ বিঘা মালটা বাগানে প্রায় ৩শ মালটা গাছ রয়েছে। তার নার্সারী থেকে ১ ফুট উঁচু একটি মালটার চারা ২৫ টাকা ও ৫/৬ ফুট চারা প্রায় ৫শ থেকে ৬শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তার দেখাদেখি বিভিন্ন নার্সারীতে মালটার ক্ষেত তৈরী হচ্ছে এবং এলাকার বিভিন্ন বাড়ীতে মালটার চারা লাগানো হয়েছে। পাকা মালটা খেতে খুবই সুস্বাধু তবে কাঁচা ফলও খেতে ভাল লাগে। মালটা ফলের প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে। মালটা ফল কেজি প্রতি দেড়শত টাকা থেকে ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এএইচএম জাহাঙ্গীর আলম জানান, উপজেলার গদাইপুর এলাকার বিভিন্ন বাড়ীতে মালটার গাছ রয়েছে। তাছাড়া ফলদ বৃক্ষ মেলায় কৃষি অফিস চত্ত্বর থেকে মালটার চারা বিক্রি হয়েছে। তবে গদাইপুরের বাণিজ্যিক ভাবে মালটার বাগান ও মালটার নার্সারী গড়ে উঠেছে সেটি জানা ছিল না। তিনি আরো জানান, এ খবর জানার পরপরি তিনি কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের দিয়ে আক্তারুলের মালটা বাগান ও মালটা নার্সারী ক্ষেতের খোঁজ খবর নিয়েছেন। তাছাড়া কৃষি অফিস থেকে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে মালটা গাছ লাগানোর জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।