শনিবার ● ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » স্বাস্থ্যকথা » কেশবপুরের হেলথ কেয়ার হসপিটালের বিতর্কিত কর্মকান্ড ॥ একই ব্যক্তির দু’রকম রক্তের গ্রুপ
কেশবপুরের হেলথ কেয়ার হসপিটালের বিতর্কিত কর্মকান্ড ॥ একই ব্যক্তির দু’রকম রক্তের গ্রুপ
এম এ রহমান, কেশবপুর (যশোর) ঃ
যশোরের কেশবপুরে হেলথ কেয়ার প্রাইভেট হসপিটালের বিতর্কিত কর্মকান্ডে রোগীদের জীবন ঝুকিপুর্ণ হয়ে পড়ছে। চিকিৎসা সেবার মান একেবারে ভেঙ্গে পড়েছে। দালালদের খপ্পরে পড়ে অযথা প্যাথলোজিক্যাল টেষ্টের নামে হয়রানির শিকার হচ্ছে অসংখ্য রোগী। আবার প্যাথলোজি রিপোর্টেও ধরা পড়েছে বড় ধরনের ভূল। একই ব্যক্তির দু’রকম রক্তের গ্রুপ। সম্প্রতি রেক্সেনা নামে এক গৃহবধূর ৫ মাসের ব্যবধানে দু’রকম রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করেছেন এ ক্লিনিক। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিযোগটি তদন্তের জন্য ১৯ ডিসেম্বর ১৬ তারিখে ০৪.৪৪.৪১৩৮.০০০.১১.০১৬.২০১৬-১২৩২, নং স্মারক মোতাবেক কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব প্রদান করেছে।
অভিযোগসুত্রে জানাগেছে, উপজেলার কন্দর্পপুর গ্রামের বজলুর রহমান তার স্ত্রী রেক্সেনা বেগমের রক্তের গ্রুপ পরিক্ষার জন্য গত ৩১ মে ১৬ তারিখে হেলথ কেয়ার হসপিটালে নিয়ে যায়। রক্ত পরিক্ষার পর ডা. জিকেএম শামসুজ্জামান স্বাক্ষরিত রেক্সেনা বেগমের রক্তের গ্রুপ ‘এবি’ (পজেটিভ) এর প্রত্যায়ন প্রদান করে । সেই অনুযায়ী ওই গ্রুপের ৩ ব্যাগ রক্ত জোগাড় করে তার অসুস্থ স্ত্রীর শরীরে দেওয়ার পর সে আরো অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন বজলুর রহমান তার স্ত্রী রেক্সেনা বেগমের রক্তের গ্রুপ রিক্ষার জন্য গত ৩ নভেম্বর কেশবপুর সর্জিক্যাল ক্লিনিকে নিয়ে যায়। সেখানে রক্ত পরিক্ষার পর তারা রেক্সেনা বেগমের রক্তের গ্রুপ ‘এ পজিটিভ’ প্রত্যায়ন প্রদান করে। দুই ক্লিনিকে দুই রকম এরিপোর্টে সে দিশেহারা হয়ে পড়ে। গত ৪ নভেম্বর পুঃরায় সে তার স্ত্রী রেক্সেনা বেগমের রক্তের গ্রুপ পরিক্ষার জন্য হেলথ কেয়ার হসপিটালে নিয়ে যায়। তৃতীয় দফায় রক্ত পরিক্ষার পর ডা. জিকেএম শামসুজ্জামান স্বাক্ষরিত রেক্সেনা বেগমের রক্তের গ্রুপ ‘বি’ (পজেটিভ) এর প্রত্যায়ন প্রদান করে । ৫ মাসের ব্যবধানে তার স্ত্রী রেক্সেনা বেগমের দু’রকম রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করেছেন। একই ক্লিনিকে একই ব্যক্তির রক্তের গ্রুপ দু’রকমের রিপোর্টে সকলেই বিস্মত হয়েছেন। এঘটনায় গত ১২ ডিসেম্বররেক্সেনা বেগমের স্বামী বজলুর রহমান বাদী হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ রায়হান কবির বরাবর একটি লিখিতি অভিযোগ দাখিল করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ রায়হান কবির বলেন, অভিযোগ তদন্তের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। ঘটনা সত্য হলে ওই ক্লিনিকের লাইসেন্স বাতিলের জন্য সিভিল সার্জনকে পত্র দেওয়া হবে।
হসপিটালের ম্যানেজার শাহাজান আলি জানান, ম্যাডামের নামে ক্লিনিকের লাইসেন্স হলেও তার কোন মোবাইল নম্বর নেই আমাদের কাছে। হসপিটালে নিয়মিত কোন ডাক্তার থাকেন না। জামান স্যার নিয়মিত ও তার ছেলে মাঝে মধ্যে আসেন এবং রোগি দেখেন।
ডাঃ শামসুজ্জামান বলেন, ওই দিন ৫ টি সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়েছে। এ সময় অজ্ঞলির হার্টফেল করলে তাকে যশোর ¯হানান্তর কালে রাস্তায় তার মৃত্যু হয়। রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ের ব্যাপারে তিনি বলেন, একই রেক্সোনার রিপোর্ট কিনা দেখতে হবে। তবে টাইপে ভুল হতেই পারে।