শনিবার ● ৫ আগস্ট ২০১৭
প্রথম পাতা » সর্বশেষ » ৭ মাসের অভিযানে ৪৪৯ জন মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবী আটক ॥ মামলা হয়েছে ৩৯২টি
৭ মাসের অভিযানে ৪৪৯ জন মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবী আটক ॥ মামলা হয়েছে ৩৯২টি
মাগুরা প্রতিনিধি :
‘মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স’ ঘোষনা করে মাগুরায় গত ৭ মাসে মাদক বিরোধী অভিযানে ৪৪৯ জন মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবীকে আটক করেছে পুলিশ। মাদক আইনে মামলা হয়েছে ৩৯২টি। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাদক বিরোধী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ মাসে জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১ কেজি ৬৮৬.৫ গ্রাম হেরোইন, ৬ হাজার ১৯৮ পিস ইয়াবা, ৫২ কেজি ৪৫৩ গ্রাম গাঁজা, ৪০৩ বোতল ফেন্সিডিল, ৮৭.২৫ লিটার চোলাইমদ, ৯৫ লিটার তাড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্র আরো জানায়, পুলিশ অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে মাদক ব্যাবসায়ী, বিক্রেতা, সেবনকারী এবং বিপননকারিসহ মাদকের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে। এ ছাড়া কমিউনিটি পুলিশিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকাসহ স্কুল,কলেজ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে মাদক বিরোধী কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। মাদক বিরোধী যুদ্ধে জেলার রাজনীতিবীদ, জনপ্রতিনিধিসহ সকল স্তরের মানুষ পুলিশকে সহযোগিতা করছে। তাছাড়া গত ২৭ মার্চে মাগুরা শহরের নোমানী ময়দানে মাদক বিরোধী একটি অনুষ্ঠানে প্রায় ২০০ জন মাদক সেবী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি দেয়। এ সময় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের মধ্যে শাড়ী ও লুঙ্গি বিতরণ করা হয়। শুধু তাই নয়, ওই অনুষ্ঠানে যারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আশার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তারা সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন করছে কিনা, তা পুলিশের পক্ষ থেকে নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে।
অন্যদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে ২৪ জন মাদক ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা বিভিন্ন সরকারি অফিসে দেয়ার পাশপাশি তাদের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বল করতে বলা হয়েছে। তাছাড়া মাদকের বিরুদ্ধে জণজাগরণ সৃষ্টির পাশপাশি বিবাহ রেজিস্ট্রির পূর্বে পাত্র-পাত্রী মাদকমুক্ত কিনা, বা তার পিতা-মাতা আতœীয় স্বজন মাদক ব্যবসা বা সেবনের সাথে জড়িত কি না, তা যাচাই করে বিবাহ সম্পন্ন করার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ঠদের অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিবাহের পূর্বে ছেলে বা মেয়ে মাদকাসক্ত কিনা, তা যাচাইপূর্বক স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে সনদ নিতে পারেন অভিভাবকরা। এর ফলে যৌতুক ও নারী নির্যানতন অনেকাংশে কমে আসবে। কেননা মাদকাসক্ত তরুণ-তরুণীরা পরিবার ও সমাজে নানা ধরনের বিশৃংঙ্খলা সৃষ্ঠি করে। মাদকাসক্ত ছেলেরা টাকার জন্য প্রায়ই তাদের স্ত্রীদের চাপ দেয়। এর ফলে পারিবারিক ও সামাজিক অশান্তির সৃষ্টি হয়।
জেলা প্রশাসক আতিকুর রহমান বলেন, মাদক ব্যবসায়ী বা মদক সেবীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহন করা হয়েছে। মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে গণজাগরণ সৃষ্টির লক্ষে মাদক বিক্রেতাদের প্রতিহত ও ব্যবসা ত্যাগসহ তরুণ-তরুণীরা যাতে মাদকাসক্ত না হয় এর জন্য ব্যাপক পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করছে জেলা প্রশাসন।
পুলিশ সুপার মুনিবুর রহমান বলেন, মাগুরাকে মাদক মুক্ত করতে ‘মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স’ ঘোষনা করে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। জেলার যেসব রুট দিয়ে মাদক পাচার হয়, সেসব এলাকায় ব্যাপক নজরদারিরসহ অভিযান পরিচালিত হওয়ায় জেলায় মাদকের ব্যাপকতা অনেকটাই কমে এসেছে। সর্বোপরি মাদকমুক্ত মাগুরা গড়তে যা যা করা দরকার, পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার সব রকম পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।