বৃহস্পতিবার ● ২৪ মে ২০১৮
প্রথম পাতা » কৃষি » পাইকগাছায় কাঁঠালের ফলন ভাল হয়েছে
পাইকগাছায় কাঁঠালের ফলন ভাল হয়েছে
প্রকাশ ঘোষ বিধান ॥
পাইকগাছায় কাঁঠালের আশানারূপ ফলন হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া থাকায় গাছে ব্যাপক হারে কাঁঠাল ধরেছে। তবে মৌসুম শুরুতে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় কাঁঠালগুলো বৃদ্ধি কম হওয়ায় কিছুটা ছোট হয়েছে। তবে পরবর্তীতে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় কাঁঠাল স্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। বাগান মালিকরা কাঁঠালের ভাল ফলন পেতে কাঁঠাল বাগানে পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছে। কিছু কিছু কাঁঠাল আগাম পাঁকা শুরু হয়েছে। যা এলাকার হাঁট- বাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানাযায়, উপজেলায় ৬০ হেক্টর জমিতে কাঁঠালের আবাদ হয়েছে। উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মধ্যে গদাইপুর, হরিঢালী, কপিলমুনি, রাড়–লীতে কাঁঠালের আবাদ হয়। তাছাড়া চাঁদখালী ও পৌরসভার আংশিক এলাকায় কিছু কিছু কাঁঠাল গাছ রয়েছে। এলাকায় পরিকল্পিত ভাবে কাঁঠাল বাগান গড়ে ওঠেনি। তবে মিশ্র বাগানে কাঁঠাল বাগান রয়েছে। আইলায় পাইকগাছা এলাকায় ব্যাপক প্লাবিত হওয়ায় অনেক কাঁঠাল গাছ মরে গেছে। কাঁঠাল কাঁঠের ব্যাপক চাহিদা থাকায় এলাকার বড় বড় গাছ গুলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া সে ভাবে কোন কাঁঠাল বাগান গড়ে ওঠেনি এবং এলাকায় বড় কোন কাঁঠাল গাছ তেমন একটা চোখে পড়ে না। এছাড়া কাঁঠাল সবজি হিসাবে বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রচুর। উপজেলায় প্রায় ৮শ মেট্রিকটন কাঁঠাল উৎপাদন হবে বলে কৃষি অফিস ধারণা করছে। একটি কাঁঠাল ৪০ টাকা থেকে ২শ টাকার অধিক দামে বিক্রি হচ্ছে। আষাঢ়-শ্রাবণ মাস কাঁঠাল পাঁকার উৎকৃষ্ট সময়। তবে জ্যৈষ্ঠ মাস থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ কাঁঠাল বাজার বেঁচা-কেনা হচ্ছে।
কাঁঠাল রসালো ও সু-স্বাদু একটি ফল। কাঁঠাল প্রোটিন ও ভিটামিন সমৃদ্ধ ফল। শহর ও গ্রাম অঞ্চলের উভয় মানুষের কাছে খুবই পছন্দের। প্রতি ১শ গ্রাম পাঁকা কাঁঠালে ১.৮ গ্রাম প্রোটিন, ০.৩০ গ্রাম ফ্যাট, ২.৬১ গ্রাম ক্যালসিয়াম, ০.১১ ভিটামিন ‘বি-১’, ০.১৫ গ্রাম ভিটামিন ‘বি-২’, ২১.০৪ গ্রাম ভিটামিন ‘ই’ ও ১.০৭ গ্রাম লৌহ রয়েছে। মানুষের সুস্থ্য সবল স্বাস্থ্যের জন্য ভিটামিনের অভাব পূরণে কাঁঠাল খাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। কাঁঠালের একটি বড়গুণ এর কোন কিছু বাদ যায় না। কাঁঠালের কোষ, খোসা ও বিচি সব কিছুই প্রয়োজনীয়। বিচি উৎকৃষ্টমানের সবজি হিসাবে তরকারি রান্না করে খাওয়া হয়। কাঁঠালের খোসা গরু-ছাগলের প্রিয় খাদ্য। তাছাড়া কাঁঠালের পাতা ছাগল-ভেড়া-গরুর প্রিয় খাবার হিসাবে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কাঁঠাল উৎপাদনে কোন খরচ না থাকায় চাষীরা লাভবান বেশি হয়। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এএইচএম জাহাঙ্গীর আলম জানান, এ বছর উপজেলায় কাঁঠালের ফলন ভাল হয়েছে। ব্যক্তি উদ্যোগে কাঁঠাল গাছ লাগানোর জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। কাঁঠাল আবাদে তেমন কোন খরচ হয় না। শুধু বাগান পরিচর্যা করলে চলে। এতে কৃষকরা কাঁঠাল আবাদে লাভবান হয় বেশি।